কানপুর মাছলি বাজার মসজিদের ঘটনা ও ব্রিটিশ সরকারের রায়ের বিরুদ্ধে আলা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র ফাতওয়া :
কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসবিরােধী ইংরেজদের বিচার বিভাগীয় কোনাে রায়কে আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি মানতে পারেননি। সে সময় অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চুপ থাকার বদলে ইংরেজ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এ মসি সৈনিক কলমযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ব্রিটিশদের রায়কে যারা মাথা পেতে নিতেন তাদের বিরুদ্ধেও কলম চালাতেন তেজস্বী তরবারির ন্যায়। হােক না তারা তাঁর যে কোনাে পরম বন্ধু বা আপনজন। সেখানে তাঁর বিন্দুমাত্র ছাড় নেই। কানপুরে মাছলি বাজারে ব্যাখে মসজিদের ঘটনাটি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ১৯১৩ ঈসায়ীর ফেব্রুয়ারীতে ব্রিটিশ সরকার রাস্তা সম্প্রসারণের অজুহাতে উল্লেখিত মসজিদটির পূর্ব অংশ ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। ঐ জামে মসজিদে ওলামাগণের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে বলা হয়েছে মসজিদের পূর্বাংশ, যেখানে গােসল খানা রয়েছে, তা মসজিদেরই অংশ। ইসলামী শরিয়তে মসজিদের কোনাে অংশ বিক্রি, হস্তান্তর, রদবদল ইত্যাদি করা যাবে না। এ ফাতওয়ার সমর্থনে বেরেলি শরিফ, বদায়ুন ও ফিরিঙ্গি মহলের ওলামাগণের ফাতওয়া প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এতে সরকারের সিদ্ধান্তে কোনাে পরিবর্তন আসলাে না; বরং ১৯১৩ ঈসায়ী ৩ জুলাই ব্রিটিশ সরকার মসজিদের উক্ত অংশটি ভেঙ্গে দিলাে। তার প্রতিবাদে আম মুসলিম জনতা রাস্তায় মিছিল নিয়ে ফেটে পড়লাে। ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের উপর গুলি বর্ষণ করে এবং বহু লােককে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়েছিলাে। মুসলমানরা অত্র স্থানে ইটগুলাে পুনরায় স্ব-স্ব স্থানে বসিয়ে দেওয়াল তৈরি করে ফেললাে। অবশেষে ১৬ আগষ্ট ১৯১৩ ঈয়ায়ী মৌলভি আব্দুল বারি ফারাঙ্গি, রাজা সাহেব মাহমুদ আবাদ ও স্যার রেযা আলির নেতৃত্বে মুসলমানের একটি প্রতিনিধি দল উত্তর প্রদেশের গভর্ণরের সাথে সাক্ষাত করেন এবং ১৪ অক্টোবর ১৯১৩ ঈয়ায়ী এ সকল প্রতিনিধি কতিপয় শর্তে মুসলিমজাতির পক্ষে ভারতের ভাসরায়ে হিন্দু'র সাথে বিষয়টি মীমংসা করেন।
উল্লেখিত শর্তসমূহের মধ্যে নিম্নের শর্তটি বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য ছিলাে। শর্তটি হচ্ছে- "যেহেতু মসজিদের সাধারণ উচ্চতা রাস্তার উচ্চতা হতে কয়েক ফুট উপরে সেহেতু গােসল খানাটি পূর্বেকার স্থানে পুণঃনির্মাণ করা হবে। কিন্তু নিচু ভূমিতে ফুটপাত নির্মাণ করা হবে। যাতে করে পথচারী পার হতে পারে।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন