আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসামান্য জ্ঞানের অধিকারী করেছিলেন। তিনি কমবেশি পঞ্চাটির বিষয়ে কলমধারণ করেছেন এবং
অনেক নামীদামী কিতাব রচনা করেছেন। প্রত্যেক শাস্ত্রে তাঁর প্রচুর পারদর্শিতা ছিল। সময় নির্ণয় বিদ্যায় তিনি এতই পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন যে, দিনের বেলায় সূর্য এবং রাত্রি বেলায় নক্ষত্র দেখে তিনি নির্ভূলভাবে সময় নিরূপণ করতে পারতেন। এতে কখনও এক মিনিটেরও কমবেশী হত না। গণিত শাস্ত্রে তিনি অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন।
কথিত আছে যে, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডক্টর জিয়া উদ্দিন, যিনি গণিত শাস্ত্রে বিদেশী ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এবং স্বর্ণ পদকও লাভ করেছিলেন। একদা কোন এক গাণিতিক সমস্যার সমাধানের জন্য
আ'লা হযরত এর দরবারে হাজির হন।
আ'লা হযরত তাঁকে বললেন: "আপনার প্রশ্নটা বলুন।" তিনি বললেন: "প্রশ্নটা এতই জটিল যে, এ অবস্থায় সহজভাবে তা বলা যাবে না।"
আলা হযরত তখন বললেন: "তাহলে বিস্তারিতভাবেই বলুন।" ভাইস চ্যান্সেলর সাহেব আলা হযরত কে প্রশ্নটা বিস্তারিত
বললেন। প্রশ্নটা শুনে আ'লা হযরত সাথে সাথেই তার সন্তোষজনক উত্তর দিয়ে দিলেন। তাঁর উত্তর শুনে ভাইস চ্যান্সেলর সাহেব কিছুক্ষণ অবাক হয়ে রইলেন। তারপর তাঁকে বললেন: "হযরত! আমি এ প্রশ্নের সমাধানের জন্য জার্মান যেতে ইচ্ছা করেছিলাম, কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ম বিভাগের অধ্যাপক মাওলানা সায়্যিদ সুলায়মান
আশরাফ সাহেব আমাকে সমস্যাটার সমাধানের জন্য প্রথমে আপনার নিকট
আসতে বলায় আমি এখানে আসলাম। আপনার উত্তর শুনে মনে হচ্ছে, আপনি সমস্যাটার সমাধান যেন বইতে নিজ চোখে দেখতে পাচ্ছেন।"
আলা হযরতের এমন একটি জটিল প্রশ্নের জবাবে ডক্টর সাহেব আনন্দিত হয়ে গেলেন। আলাপ শেষে তিনি তাঁর নিকট থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। তাঁর জ্ঞানের গভীরতা ও ব্যক্তিত্বে তিনি এতই মুগ্ধ হয়ে গেলেন যে, মুখে দাড়ি রেখে দিলেন এবং নামায রােযার অনুসারী হয়ে যান। (হায়াতে আ'লা হযরত, ১ম খণ্ড, ২২৩, ২২৯ পৃষ্ঠা, মাকতাবাতুল মদীনা, বাবুল মদীনা, করাচী)।(ইমাম আহমদ রযার জীবনী,পৃষ্ঠা - ৮,৯)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন