আলা হযরত, ইমাম আহমদ রেযা খান (رحمة الله) এর এক মুরীদ ‘আমজাদ আলী খান কাদিরী রযবী’ (رحمة الله) শিকার করার জন্য বের হলেন। তিনি যখন শিকারের উপর গুলি চালালেন তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে কোন এক পথচারীর গায়ে গুলি লাগল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করল। কোর্টে হত্যা প্রমাণিত হল এবং ফাঁসির রায় দেয়া হল। পরিবার পরিজন ও আত্মীয় স্বজন নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বে কাঁদতে কাঁদতে সাক্ষাতের জন্য পৌঁছল। তখন আমজাদ আলী সাহেব বলতে লাগলেন, আপনারা সবাই নিশ্চিন্তে থাকুন, আমার ফাঁসি হতে পারে না। কারণ আমার পীর ও মুর্শিদ সায়্যিদী আলা হযরত (رحمة الله) স্বপ্নে এসে আমাকে এ সুসংবাদ দিয়েছেন যে, “আমি আপনাকে মুক্তি দিলাম।” কান্নাকাটি করে লোকেরা চলে গেল। ফাঁসির তারিখে পুত্র শোকে স্নেহ ময়ী মা কাঁদতে কাঁদতে আপন স্নেহের পুত্রের শেষ সাক্ষাতের জন্য আসলেন।الحمد الله عز و جل আপন মুর্শিদের উপর এমনই দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে এমনিই হওয়া চাই। মাকেও অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে আরজ করলেন, “মা আপনি চিন্তিত হবেন না, ঘরে চলে যান। ا ن شا ء الله عزو جل আজকের নাশতা আমি ঘরে এসেই করব।” মা চলে যাওয়ার পর আমজাদ আলীকে ফাঁসির কাষ্ঠে হাযির করা হল। গলায় ফাঁসির রশি পরানোর আগে নিয়মানুসারে যখন তাঁর শেষ ইচ্ছা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল তখন তিনি বলতে লাগলেন, “জিজ্ঞাসা করে কি লাভ হবে? এখনোতো আমার সময় আসেনি।” তারা মনে করল, মৃত্যুর ভয়ে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই ফাঁসি দাতা ফাঁসির রশি তাঁর গলায় পরিয়ে দিল। এমনি মুহুর্তে তারযোগে বার্তা এসে গেল যে, “মহারাণী ভিক্টোরিয়ার মুকুট পরিধানের খুশিতে এতজন হত্যাকারী ও এতজন কয়েদীকে ছেড়ে দেয়া হোক।” তাৎক্ষণিকভাবে রশি খুলে তাঁকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে নামিয়ে মুক্তি দেয়া হল। এদিকে ঘরে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। সবাই লাশ আনার ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত ছিল। আর তখনই আমজাদ আলী সাহেব ফাঁসির মঞ্চ থেকে সোজা নিজ ঘরে পৌঁছল এবং বলতে লাগল, “আমার জন্য নাস্তা আনুন! আমি বলে দিয়েছিলাম যে,ان شاء الله عزوجل নাস্তা ঘরে এসেই করব। (তাজালি−য়াতে ইমাম আহমদ রযা, পৃ-১০০, বরকাতি পাবলিশার্স, বাবুল মাদীনা)।
“আহে দিলে আছির ছে লব তক ন আয়ি থি,
আওর আপ দৌড়ে আয়ে গ্রেফতার কি তরফ।”
(যওকে নাত)
সূত্র: ইসলামী বিশ্বকোষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন