রবিবার, ২১ মার্চ, ২০২১

 


আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র দানশীলতা 

নিজ লেপ গরিব দুঃখীকে দিয়ে দেয়া:

 আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র নজিরবিহীন দানশীলতার বর্ণনা দিতে গিয়েতাঁর জীবনী লেখক মাওলানা নসিম বসতবি বলেন- 

"জনাব যাকাউল্লাহ খান সাহেব বর্ণনা করেন, তখন শীতকালীন মৌসুম ছিলো। আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রতিদিনের নিয়ম অনুসারে মাগরিবের নামায আদায় করে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের কক্ষে তাশরিফ নিয়ে আলাপচারিতার পর মানুষদেরকে বিদায় করছেন। ঐ সময় খাদেমের দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনার কাছে ছােট লেপ নেই? খাদেম চুপ করে রইলেন। 

ঐ সময় আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র গায়ে যা ছিলাে, তা খুলে খাদেমকে দিয়ে বললেন, গায়ে পরে নেন। খাদেম আদব সহকারে কদমবুছি করলেন এবং হযরতের ফরমান মােবারকের তামীল করে ছােট লেপটি নিলেন। 

তিনি আরও বর্ণনা করেন যে, "আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ছােট লেপটি আমাকে দান করার দুই তিন দিন পর নতুন আরেকটি লেপ তৈরি করে আনা হলো।কয়েকদিন ব্যবহার করলেন।

 এরপর একরাত্রে একজন মুসাফির মসজিদে আসলেন এবং আলা হযরতের খেদমতে আরয করলেন, 'হুযুর! গায়ে দেয়ার মতাে আমার কোনাে কিছু নেই। তার কথা শুনে আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর সে নতুন লেপটিই মুসাফিরকে দিয়ে দিলেন।"(মাওলানা নসিম বসতবি রচিত "মুজাদ্দিদে ইসলাম",আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র উপর আরোপিত অপবাদের জবাব,পৃষ্ঠা - ২৫৫ ) 

শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

 


ব্রিটিশদের জন্য সরকার শব্দ ব্যবহারে নিষিদ্ধ ঘােষণা :- 

প্রখ্যাত আ'লা হযরত গবেষক আল্লামা আবদুল হাকিম শরফ ক্বাদেরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন- একদা মাওলানা হেদায়ত রাসূল সাহেব আ'লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র সামনে রামপুরের (ব্রিটিশ নিযুক্ত) নবাবকে সরকার অভিধায় স্মরণ করলে তিনি তৎক্ষনাৎ এরশাদ করলেন - (উর্দুর অনুবাদ,কিতাবে উর্দু উল্লেখ আছে) অর্থাৎ, হুজুর সৈয়্যদে কায়েনাত ﷺ ব্যতীত আমরা দুনিয়াবি কোনো সরকারের প্রয়ােজন মনে করি না।

তাঁর গ্রন্থভাণ্ডারগুলাে পর্যালােচনা করলে দেখা যায় যে, তিনি ইংরেজ তাে দূরের কথা, কোনাে মুসলিম রাজা বাদশাহদের জন্যও 'সরকার শব্দটি ব্যবহার করেননি।

(মাহনামায়ে মাআ'রেফে রেযা,প্রবন্ধ:ফাযেলে বেরেলি এর এক এলজাম কি হাকিকত,পৃষ্ঠা:২৬,এদারায়ে তাহরিকে ইমাম আহমদ রেযা ইন্টারন্যাশনাল, পাকিস্তান, আগস্ট-০৫ ঈসায়ী সংখ্যা,পৃষ্ঠা:২৬)।

অথচ ওহাবিগুরু আশরাফ আলি থানভি ইংরেজ দখলদারদেরকে 'সরকার' অভিধায় ভূষিত করেছে। তার ভাষায়- (উর্দুর অনুবাদ,কিতাবে উর্দু উল্লেখ আছে) "ইংরেজদের যে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ছিলাে না, তা নয়; বরং এটা বিদ্রোহীদের সন্দেহ মাত্র। সাধারণ জনগণ তাে সরকারের ব্যাপারে পূর্ণ আস্তাবান ছিলাে"। (আশরাফ আলি থানভি রচিত "তাহজিরুল ইখওয়ান",পৃষ্ঠা: ০৯)।

প্রিয় পাঠক! লক্ষ্য করুন, এখানে ওহাবিগুরু থানভি সাহেব ইংরেজ দখলদারদেরকে বললেন 'সরকার আর ব্রিটিশবিরােধী সম্মানিত মুক্তিযােদ্ধাদেরকে বললেন 'বাগী বা বিদ্রোহী'।

দেওবন্দিদের কুতুবে আলম মৌং রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি তাে ব্রিটিশদের প্রেমের নেশায় মত্ত হয়ে এমন কথা বললেন, যা অত্যন্ত মাদকাসক্ত ব্যতীত আর কেউ বলতে পারে না। সে বলেছে- (উর্দুর অনুবাদ,কিতাবে উর্দু উল্লেখ আছে) "যখন আমি বাস্তবেই সরকারের (ইংরেজ) অনুগত। তাই মিথ্যা অপবাদে আমার চুল পরিমাণও ক্ষতি হবে না। আমি যদি মারাও যাই, তবে মালিক হিসেবে তার এখতেয়ার রয়েছে। তিনি যা চান, তাই করতে পারেন"।

(আশেক এলাহি মিরাঠি রচিত তাজকেরাতুল রশিদ", খণ্ড: ০১, পৃষ্ঠা: ৮০, মাকতাবুল শায়খ, সাহারানপুর,আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র উপর আরোপিত অপবাদের জবাব,পৃষ্ঠা - ৮৪-৮৫)। 



শুক্রবার, ১২ মার্চ, ২০২১

 শরীয়তের বিধি-বিধান নবীর হাতে 


হাদিস ২১ :

হযরত ইবরাহীম ইবনে আবদুর রহমান ইবনে আওফ বর্ণনা করেন, একদা আমি কুমুলা নামক স্থানে একটা পাখি শিকার করলাম, অতঃপর সেটি হাতে নিয়ে আমি বের হলাম। এমন সময় আমার সম্মানিত পিতা আবদুর রহমান ইবনে আওফ (رضي الله عنه) এর সাথে আমার সাক্ষাত হলাে। অতঃপর তিনি রাগান্বিত অবস্থায় আমার কান মলে দিলেন। তারপর আমার হাত থেকে নিয়ে পাখিটা তিনি ছেড়ে দিলেন। অতঃপর তিনি বললেন,

حرَّم رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم صيد ما بين لا بتيها _

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) পবিত্র মদীনায় শিকার করা নিষিদ্ধ ঘােষণা করেছেন। 

(. শারহু মাআনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২।)


হাদিস ২২ :

হযরত সা'ব ইবনে জাচ্ছামা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত,

انّ رسول الله صلى الله تعا لى عليه وسلم حرّم البقيع وقال لاحمى الا لله ورسوله

নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জান্নাতুল বাকীকে হারাম সাব্যস্ত করেছেন। আর তিনি বলেছেন : আল্লাহ জাল্লা - জালালুহু ও তাঁর রসূল (ﷺ) ব্যতীত কারাে জন্য চারণভূমির মালিকানা নেই। 

(শারিহ মাআনিল আমার, বাবু ইয়াহিয়াইল আবদিল মাইতি, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানী, করাচী - ১৮৫/২।)

◼ তিনটি বর্ণনাই ইমাম তাহাবীর (রহঃ) (অর্থাৎ উপর্যুক্ত তিনটি হাদীসই ইমাম তাহাবী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন) 

◼ উপরােক্ত ১৬টি হাদীসের মধ্যে প্রথম ৮টির মধ্যে স্বয়ং হুযুরে আক্বদাস (ﷺ) ইরশাদ করেছেন :

আমি মদীনা শরীফকে হারাম ঘােষণা করেছি। 

◼ আর পরবর্তী ৮টির মধ্যে সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন 

হুযুর (ﷺ) হারাম ঘােষণা করার কারণে মদীনায়ে তাইয়েবা হারাম হয়ে গেল। বাস্তবিকপক্ষে এ গুণ মহাপ্রতাপশালী আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট।

◼ প্ররাম্ভিক আট খানা থেকে পাঁচটির মধ্যে স্বীয় সম্মানিত পিতা সাইয়িদুনা ইবরাহীম (عليه السلام) এর দিকে সম্পর্কিত করেই ইরশাদ হয়েছে যে,

সম্মানিত মক্কাকে পবিত্র হারাম ঘােষণা স্বয়ং তিনিই করেছিলেন, তিনিই নিরাপত্তা দানকারী বানিয়েছেন। 

◼ প্রকৃতপক্ষে স্বয়ং রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন -

ان مكة مرحرمها الله تعالى ولم يحرمعا الناس - البجارى والتر مذى عن ابى شُرَيح ن البغد ادى رضي الله تعالى عنه -

নিঃসন্দেহে মক্কায়ে মুয়াজ্জমাকে আল্লাহ তাআলা হারাম করেছেন। কোন ব্যক্তি এটিকে হারাম করেননি।৩৫

এ হাদীস বুখারী ও তিরমিযী হযরত আবু শুরায়েখ বাগদাদী . (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন।

৩৫▪ সহীহ বুখারী, আবওয়াবিল উমরা, বাবু লা- ইয়াদিদু শাজারুল হারাম, কদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ২৪৭/১!

▪সুনানে তিরমিযী, কিতাবুল হজ্জ, হাদীস নম্বও : ৮০৯, দারুল ফিকর, বৈরুত - ২১৭/২।

এ সমস্ত সনদসমূহ (হাদীসের মূল কথাটুকু যে সূত্র পরমপরায় গ্রন্থ সংকলনকারী পর্যন্ত পৌঁছেছে) আমার পুস্তকের জন্য বিশেষ উপলক্ষ। কিন্তু তা ওয়াহাবীদের জানের উপর বড়ই মারাত্মক ও কঠিন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

পবিত্র মদীনার জঙ্গল হারাম হওয়াটা শুধুমাত্র উপর্যুক্ত হাদীসসমূহে বলা হয়েছে তা নয়, বরং এছাড়াও অসংখ্য হাদীস সমূহে উপস্থাপিত হয়েছে। 


হাদিস ২৩ :

হাদীসে সহীহাইন : হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

المد ينة حرم من كذا الىذا لا يقطع مشجر ها - هما واحمد والطحا وى واللفظ للجا مع العحيح-

"মদীনা এখান থেকে ওখান পর্যন্ত হারাম, সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না।" ৩৬

এ হাদীসটি ইমাম বুখারী ও মুসলিম এবং আহমদ আর তাহাবী বর্ণনা করেছেন। আর বর্ণিত শব্দসমূহ জামে আস - সহীর।

৩৬.▪ সহীহ বুখারী, ফয়িলুল মদীনা, বাবু হুরমতিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ২৫১/১।

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফাযায়িলুল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা , কারাচী - ৪৪১/১।

▪ কানযুল উম্মাল, হাদীস নম্বও : ৩৪৮০, মুআসসানা আর – রিসালা, বৈরুত - ২৩১/১২।

▪ মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, হযরত আনাস (رضي الله عنه)'র সূত্রে বর্ণিত। আল মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ২৪২/৩।


হাদিস ২৪ :

হাদীসে সহীহাইন : হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

المد ينة حرم - الحد يث هما والطحاوى وابن جرير اللفظ للمسلم

"মদীনা হলাে হারাম।" ৩৭

এ হাদীসটি বুখারী, মুসলিম, তাহাবী ও ইবনে, জারীর বর্ণনা করেছেন, আর বর্ণিত শব্দসমূহ মুসলিম শরীফের।  

৩৭. সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ৪৪২/১। 


হাদিস ২৫ :

হাদীসে সহীহাইন : মাওলা আলী কাররামাল্লাহু তাআলা ওয়াজাহাহু হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

المد ينة حرم ما بين عير الى كذا - ولمسلم والطحا وى ما بين عير الى ثور الحد يث زاد احمد وابو داؤد فى رواية لا يجتلى خلاها ولا ينفرصيد ها _

মদীনার আইর থেকে মাওর পর্বত পর্যন্ত হারাম। ৩৮

ইমাম আহমদ ও আবু দাউদ তাদের বর্ণনায় আরাে বৃদ্ধি করেছেন যে, এখনকার ঘাস কর্তন করা যাবে না। আর এর কোন প্রাণী শিকার করা যাবে না।” ৩৯

৩৮.▪ সহীহ বুখারী, ফয়িলুল মদীনা, বাবু হুরমাতিল মদীনা, কদমী কিতাব খানা, করাচী - ২৫১/১।

▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কদীমী কিতাব খানা, করাচী - ৪৪২/১,

▪ সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মানাসিক, বাবু ফি তাহরিমুল মদীনা, আফতাবে আলম প্রেস, লাহাের – ২৭৮/১।

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত – ৮১/১।

▪ শারহু মা’আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদিল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী -করাচী - ৩৪১/২।

৩৯.▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত আলী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত -১১৯/১।

▪ সুনানে আবু দাউদ, কিতাবুল মানাসিক, বাবু ফি তাহরিমল মদীনা, আফতাবে আলম প্রেস, লাহাের ২৭৮/১।


হাদিস ২৬ :

হাদীস সহীহ মুসলিম : হযরত সাহল ইবনে হুনায় (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর হাত মােবারক দ্বারা মদীনায়ে তাইয়েবার দিকে ইঙ্গিত করে ইরশাদ করলেন,

انّها حرم اٰمن - هو واحمد والطحاوى وابو عونة-

নিঃসন্দেহে এটি নিরাপত্তা দানকারী ও হারাম। ৪০

এ হাদীস ইমাম মুসলিম, আহমদ, তাহাবী ও হযরত আবু ওয়াইনা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন।

৪০.▪ সহীহ মুসলিম, কিতাবুল হজ্জ, বাবু ফলিল মদীনা, কাদীমী কিতাব খানা, কারাচী - ৪৪৩/১।

▪ মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত সাহল ইবনে হুনায়ক হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত - ৪৮৬/৩।

▪ কানযুল উম্মাল, হযরত আবু ওয়াইনার বরাতে বর্ণিত, হাদীস নম্বর ৩৪৮০০, মুআসসাসা আর - রিসালা, বৈরুত - ২৩০/১২।

▪ শারহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু। সায়ীদিন মদীনা, এইচ, এম. সাঈদ কোমপানী - করাচী - ৩৪২/২।


হাদিস ২৭ :

হাদীস : ইমাম আহমদ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

لهكل نبى حرم وحر مى المدينة- 

প্রত্যেক নবীর জন্যে একটি হারাম রয়েছে, আর আমার হারাম হচ্ছে মদীনা। ৪১

৪১. মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, আল - মাকতাবুল ইসলামী, বৈরুত – ৩১৮/১।


হাদিস ২৮ :

হাদীস : আবদুর রাযযাক হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন,

انّ النبى صلى الله تعالى عليه وسلم حرم كلّْ دافّةٍ اقبلت على المد ينة من العفة الحد يث-

নিঃসন্দেহে নবী করীম (অ) মদীনায় বসবাসরত প্রত্যেক গােত্রের জনসাধারণের উপস্থিতিতে মদীনার কাটাযুক্ত বৃক্ষ কর্তন করা নিষিদ্ধ ঘােষণা করেছেন। ৪২

৪২. আল মুসান্নিফ লিআবদির রাজ্জাক, বাবু হুরমাতুল মদীনা, হাদীস নম্বও : ১৭১৪৭, আল - মাজলিসুল উলামা, বৈরুত – ২৬১/৯।


হাদিস ২৯ :

হাদীস : ইমাম তাহাবী বিশুদ্ধ পন্থায় হযরত মালিক হতে, তিনি ইউনুছ – ইবনে ইউসুফ হতে, তিনি ইউসুফ হযরত আতা ইবনে ইয়াসার হতে, হযরত আতা ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেন, একবার তিনি কতিপয় ছেলেদেরকে পেয়েছিলেন, যারা একটি শৃগালকে ধরা দেয়ার জন্য ঘেরাও করেছিল । হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (رضي الله عنه) ওসব ছেলেদেরকে তাড়িয়ে দিলেন। ইমাম মালিক বর্ণনা করেন, আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, তিনি তাদেরকে একথাই বলছিলেন,

اَفِى حرَّم رسول الله صلى الله تعا لى عليه وسلم يصنع هذ ا-

কেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) - এর হারামকৃত এলাকায় এমন করা হচ্ছে । ৪৩

৪৩. শরহু মা'আনিল আসার, কিতাবুস সায়ীদ, বাবু সায়ীদুল মদীনা, এইচ, এম, সাঈদ কোমপানী, করাচী - ৩৪২/২।


হাদিস ৩০ :

হাদীস : মুসনাদুল ফিরদাউসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মসউদ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,

يبعث الله عز وجل من هذه البقيعة ومن هذا الحرم سبعين الفا يدخلون الجنة بغير حساب يشفع كل واحد منهم فى سبعين الفا وجو ههم كا لقم ليلة البدر -

আল্লাহ তাআলা কিয়ামত দিবসে এ জান্নাতুল বাকী ও হারাম ৭০ হাজার এমন কতগুলাে ব্যক্তিদের উঠাবেন যে, তাঁরা বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তাদের মধ্যে প্রত্যেকই একজন ৭০ হাজারকে সুপারিশ করবে। তাদের চেহেরা চৌদ্দ তারিখের পূর্ণিমা চন্দ্রের মতাে আলােকোজ্জ্বল হবে।

৪৪. ▪ আল – ফিরদাউস বিমসূরিল খেতাব, হাদিস : ৮১২৩, দারুল কুতুবুল আলামিয়া বৈরুত - ২৬০/৫।

▪ কানযুল উম্মাল, হাদিস : ৩৪৯৬, মআসসাসা - তুর – রিসালা, বৈরুত - ২৬২/১২।

____________________

কিতাবঃ শরীয়তের বিধি-বিধান নবীর হাতে

মূলঃ আ'লা হযরত মুজাদ্দিদ ইমাম আহমদ রেযা (রহঃ)

অনুবাদঃ মুহাম্মদ হােসাইন রেযা কাদেরী।

সূত্রঃ 🌍 ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স।

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.islamboi.rizwan

মঙ্গলবার, ২ মার্চ, ২০২১

 


ব্রিটিশ সরকার, বিচার বিভাগ ও ইমাম আহমদ রেযা রহমাতুল্লাহি আলাইহি


 ইমামে আহলে সুন্নাত আ'লা হযরত শাহ আহমদ রেযা খান বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ব্রিটিশদের অবৈধ দখলদার হিসাবে গণ্য করতেন। ব্যবসার বাহানা দিয়ে হিন্দুস্থানে এসে রাষ্ট্র ক্ষমতার মালিক সেজে যাওয়া ইংরেজদের প্রতি ইঙ্গিত করে ঘুমন্ত মুসলিমজাতিকে জেগে উঠার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন-

(কিতাবে উর্দু উল্লেখ আছে)

'অরণ্য জঙ্গল আচ্ছাদিত তিমির রাত, অন্ধ তমস ঘন কালাে মেঘজালে।

হে ঘুমন্ত! জেগে ওঠো, চোরেরাই পাহারা দিচ্ছে"


ব্রিটিশ বিচারালয় সম্পর্কে আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্ত বিরুপ ভাবাপন্ন ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ বিচার বিভাগের শরণাপন্ন না হয়ে মুসলমানদেরকে নিজেদের বিচার নিজেরা সমাধান করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।


১৩৩১ হিজরি ১৯১২ ঈসায়ী মুসলমানদের অবস্থার উন্নতির জন্য তিনি কিছু পরামর্শ পেশ করেন। তিনি বলেন- "রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিশেষ কিছু বিষয় ছাড়া মুসলমানগণ যদি নিজেদের বিভেদগুলাে নিজেরাই সমাধান করতেন এবং ব্রিটিশ বিচারালয়ে মােকাদ্দমা করে কোটি কোটি টাকা অপচয় করা হতে বিরত থাকতেন, তাহলে তারা অসংখ্য পরিবারের ধ্বংস সাধন করতে সক্ষম হতাে না"।


বিচারের জন্য ব্রিটিশ আদালতে শরণাপন্ন হওয়াকে আ'লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি শুধু অর্থনৈতিক অপচয় বিপর্যই বিবেচনা করতেন না; বরং ইসলামি মৌলনীতিরও পরিপন্থী বলে বিবেচনা করতেন। আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে বিচার বিভাগীয় যাবতীয় জ্ঞান দান করেছেন। সুতরাং মুসলমান কেনইবা দ্বীন ইসলামকে ব্রিটিশ বিচারালয়ে নিয়ে যাবে?

(*ইমাম আহমদ রেযা রচিত "তাদবিরে ফালাহ ওয়া নাজাহ ওয়া এসলাহ", পৃষ্ঠা: ০৫, প্রকাশকাল ১৩৩১ হিজরি, ১৯১২ ইংরেজি, লাহাের থেকে প্রকাশিত।

*আ'লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন বেরেলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি'র উপর আরোপিত অপবাদের জবাব,পৃষ্ঠা - ৮৩,৮৪)।